Catch the ghost part 2
Catch the ghost part 2

কোরিয়ান ড্রামা [Catch The Ghost] বাংলায় পুরো গল্প বর্ণণা পর্ব – ২

Posted on

সিওল মেট্রো স্টেশন। পৃথিবীর ৩য় বৃহত্তম মেট্রো রেলওয়ে স্টেশন। সিওল শহরের প্রায় ৮ মিলিয়ন মানুষ প্রতিদিন এই আন্ডার গ্রাউন্ড মেট্রো ব্যবহার করে যাতাইয়াত করে। এখানে মোট ১৫ টি লাইন এবং ৩০০ স্টেশন রয়েছে। এতো বড় মেট্রো ব্যবস্থাপণা হওয়ায় এখানকার ক্রিমিনালরাও এই মেট্রো স্টেশনের যাত্রীদের টার্গেট করে।

অদ্ভুত ভাবে এক এর পর এক খুন হচ্ছে এই সিওল মেট্রো স্টেশনে। ওনেকে বিশ্বাস করে এটা ভৌতিক কর্মকান্ড। তাইতো সাবওয়ে গোষ্ট নামের আতংক পুরো মেট্রোকে ঘিরে। সাথে রয়েছে অদ্ভুত এক সাহসী মেয়ের অদ্ভুত সব কর্মকান্ড। কে করছে এসব খুন? সত্যি কি কোন ভূতের উপদ্রব? নাকি রয়েছে অন্য কোন রহস্য? আজ আপনাদের সাথে আমি হাজির হয়েছি ২০১৯ এ মুক্তি পাওয়া থ্রিলার, রোমান্টিক কোরিয়ান ড্রামা Catch The Ghost এক্সপ্লেনেশন নিয়ে। আশা করছি সাসপেন্সে ভরপুর এই ড্রামাটি আপনাদের অনেক পছন্দ হবে।

২য় এপিসোডের শুরুতে আমরা দেখতে পাই ইওরিওং একা একাই চাবি নিয়ে রাতে টানেলে চলে গিয়েছিলো। এইদিকে সিওক বাসায় যাচ্ছিলো হঠাত তার কম্পিউটারে কিছু চেক করার কথা মনে পড়লে সে আবার স্টেশনে ফিরে আসে। স্টেশনে এসে সে কম্পিউটার চেক করে। এরপর ইওরিওং কে ডেকে সাড়া না পেলে সেও টানেলে চলে যায়। সেখানে কোন এক মুখোশধারী ব্যক্তি ইওরিওং কে পিছন থেকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে ফেলে দেয়।

ইওরিওং এর চীৎকার শুনে সিওকে সেখানে গিয়ে লোকটিকে তাড়া করে কিন্তু পায়ে হোচট খেয়ে সিওক লোকটিকে হারিয়ে ফেলে। এইদিকে ইওরিওং ভেবেছিলো এটা কোন ভূত। সিওক তখন রেগে বলে কোন দিক দিয়ে তোমার ওকে ভূত মনে হয়! সে একজন লোকাস্ট।সিওক সেই লোকের সেখানে ফেলে যাওয়া একটি মানিবেগ ইওরিওং কে দেখায়।

এরপর স্টেশনে ফুটেজ চেক করে সিওক বুঝতে পারে সাবওয়েতে সেইদিন চুরি করা মাবিবেগগুলো পোডারিস্টদের কাজ। যারা প্রদর্শনীর দিন সাবওয়েতে উপস্থিত ছিলো। তারাই সাবওয়েতে উঠার সময় মানিবেগ গুলি সরিয়েছে। পোডারিস্টরাই তাহলে লোকাস্ট। সিকও ইওরিওং কে জিজ্ঞেস করে তুমি টানেলে কেনো গিয়েছিলে? 

ইওরিওং বলে কারণ পেট্রোলিং এর সময় আমি কিছু একটা আওয়াজ শুনেছিলাম। সিওক রেগে বলে তাই তুলে স্ক্রিনডোর দিয়ে চলে গেছো? তুমি জানো এতে আমার চাকরি যেতে পারে। তখন অন্য এক অফিসার বলে কিছুদিন আগে একজন অফিসার স্ক্রিনডোর দিয়ে টানেলে গিয়েছিলো ইলিগাল ভাবে টানেলের ড্রয়িং বানানো এক ব্যক্তিকে ধরতে। 

সে অফিসার স্ক্রিনডর অফ করতে ভুলে গিয়েছিলো আর সেখানেই তার মৃত্যু হয়। আমাদের টানেলে যাওয়া বারণ স্ক্রিনডর দিয়ে। এতে করে চিফ এমনকি তোমারও চাকরি যেতে পারে। ইওরিওং মাথা নামিয়ে মাফ চায়। সিওক হাত ঝাড়া দিয়ে ইওরিওং এর হাত থেকে চাবি কেড়ে নেয় এবং তাকে আর কখনো টানেলে যেতে বারণ করে। কিন্ত ইওরিওং এর চাবির দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা দেখেই বুঝা যাচ্ছিলো সে আবারও টানেলে যাবে।

এর পর সিওক তার মায়ের সাথে দেখা করতে যায়। তার মা মানসিক ভাবে ভারসাম্যহীন। তার কোন কিছুই মনে নেই, এমনকি নিজের ছেলে সিওককেও চিনতে পারে না সাধারণ ভাবে। সিওকে দেখে তার মা বলে আমি দেখতে অনেক সুন্দর তাই না? তুমি তো বয়সে আমার চেয়ে অনেক বড়। সিওক বলে হ্যাঁ আপনি অনেক সুন্দর আর বয়সে আমার চেয়ে অনেক ছোট। 

সিওক সেখান থেকে যাওয়ার সময় তার মায়ের ক্যায়ার টেকারকে বলে এক্সকিউজ মি মিস আপনি কি আমার মাকে বলতে পারবেন তার ছেলে সন্ধায় তার সঙ্গে দেখা করতে আসবে। কেয়ার টেকে সম্মতি দেয়। একমাত্র এভাবেই আগে থেকে বলে সিওক তার মায়ের সাথে কিছু সময় কাটাতে পারে। যদিও তার মা তাকে চিনতে পারে না। শুধু কেয়ার টেকারদের কথায় ভরসা করে সিওককে ছেলে মেনে নেয়।

এরপর সাবওয়ে স্টেশনে নজর রাখতে সেখানে যায় সিওক এবং ইওরিওং। ইওরিওংকে বার বার টানেলের চাবির দিকে তাকাতে দেখে সিওক বলে আমি তোমাকে বলেছি না আর একটা ভুল হলে আমি তোমাকে পেট্রল ডিভিশনে পাঠিয়ে দিবো। ইওরিওং তখন সেখানে লিফলেট বিলি করতে থাকা মেয়কে সেখানে থেক দূরে যেতে বলে কারণ তাদের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছিলো। 

সেই লিফলেট বিলি করা মেয়েটি আবার নেকা কান্না শুরু করলে সিওক তাকে কান্না থামিয়ে তার কাজ চালিয়ে যেতে বলে।ইওরিওং সিওককে জিজ্ঞেস করে স্যার আমরা কাকে খুঁজছি এখানে কিভাবে বুঝবো ক্রিমিনাল কে? সিওকে ঠাট্টা করে বলে তুমি জানোনা ছোট বাচ্চাদের চোখ খুলতে তিন মাস সময় লাগে। তুমি তো নতুন বাচ্চা এখনও এই কাজে। 

সিওক এর কথা শেষ না হতেই ইওরিওং সেখানে কাউকে ফলো করে পিছনে যেতে শুরু করে। সেই লোকটি একটু অদ্ভুত ধরনের পোশাক পড়ায় ইওরিয়ং তাকে সন্দেহ করতে শুরু করে। ইওরিওং এর পিছনে সিওক যাওয়ার সময় একজন ডেলিভারি ম্যানের সাথে ধাক্কা খায়। সেই লোকটি প্রচন্ড তাড়াহুড়ায় ছিল। সিওক লোকটিকে সরি বলে।

সেই লোকটি খুব তাড়াহুড়ায় ছিল। মোবাইলে কারো সঙ্গে কথা বলতে বলতেই তিনি সিওককে বলেন কোন সমস্যা নেই। লোকটি তার পার্সেলের ব্যাগগুলো উঠিয়ে সেখান থেকে লকারের দিকে চলে যায়। সেই ডেলিভারি ম্যান কোন এক লোকের সাথে কথা বলছিল মোবাইলে। সেই লোকের হাতে ছিল একটি ছুরি। 

কোন এক লোককে আটকে রেখে সেখানে টরচার করছিল লোকটি আর বলছিল যারা আমার জিনিস নিয়েছে তাদের সবাইকে টাকা দিতে হয়েছে। তোমাকেও দিতে হবে তবে তা টাকা হতে হবে এমন কোন কথা নেই। লোকটি ডেলিভারি ম্যানকে বলে লকার থেকে আমার পার্সেল এর ব্যাগটি নাও আর যে ফোন নাম্বার আমি তোমাকে দিয়েছি সেখানে ডেলিভার করো। 

মনে রাখবে তোমার জন্য কোন ভুল না হয়। ডেলিভারি ম্যানটি লকার থেকে পার্সেলটি বের করে সেখান থেকে চলে যায়। তবে যাওয়ার সময় সে তার মোবাইলটি ভুলে সেখানেই ফেলে যায়। এইদিকে ইওরিওং সেই সেই লোকটিকে ফলো করে সাবওয়ে উঠে পড়ে। তার পিছনে পিছনে আসে সিওক।

লোকটি মোবাইল ফোন বের করে কিছু একটা করছিল। সেই সময় ইওরিওং এসে তাকে ধরে তার হাতে হেন্ডকাফ লাগাতে যাচ্ছিলো। সিওক এসে ইওরিওংকে থামিয়ে দেয় আর বলে সরি চীফ। লোকটি সোজা গিয়ে একটি লোকের হাতে  হ্যান্ডকাফ পড়িয়ে বলে সেক্সুয়াল এজাল্ট এর জন্য তোমাকে আমরা গ্রেফতার করলাম। 

আসলে লোকটি ছিল ড্যাংসন স্টেশনের চিফ।তিনি আন্ডার কভারে ছিলেন তাই এরকম পোশাক পড়েছেন। চিফ রেগে সিওককে বলে এই মেয়ে ট্রেনড না তাহলে তুমি তাকে স্কোয়াডে কেন নিয়েছো? তাছাড়া তুমি আমার এরিয়াতে আছো নিজের এরিয়া ছেড়ে আমার এরিয়ায় কাজে ব্যাঘাত করা নিয়মের বাইরে। 

সিওক ইওরিওং মাথা নামিয়ে চিফকে সরি বলে।ইওরিওং সিওককে বলে আমি পুরো চেষ্টা করব আরো ভালোভাবে কাজ করার। সিওক বলে এটাই তোমার সমস্যা। তোমার পুরো চেষ্টা করার দরকার নেই। এরপর তারা স্টেশনে ফিরে আসে। সিওক ইওরিওং এর হাতে টানেলে লোকাস্টের কাছে পাওয়া কমিশনারের ব্যাগটি দেয় আর তাকে যত্ন করে রাখতে বলে। 

ঠিক তখনই সাবওয়ের ডেলিভারি ম্যানটি স্টেশনে আসে তার মোবাইল হারানোর কমপ্লেন করতে। সিওক তাকে চিনতে পারে। তিনি স্টেশনেই তার খাবার খেতে অনুমতি নেয়। সিওক তার জন্য নুডুলস নিয়ে আসে। সিওক বলে আমি বুঝতে পারছি মোবাইল ছাড়া আপনার পক্ষে ডেলিভারি দেয়া সম্ভব না। 

আমি চেষ্টা করব যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনার মোবাইল খুজে ফিরিয়ে দিব। ডেলিভারি ম্যানটি তাড়াহুড়ো করে পুরো খাবার না খেয়েই  সিওককে ধন্যবাদ দিয়ে পার্সেল ডেলিভারি করতে চলে যায়। যাওয়ার সময় তার একটি ব্যাগ নিচে পড়ে যায়। আর কমিশনারের ওয়ালেট রাখা ব্যাগটি ডেলিভারি ম্যান এর সাথে বদলি হয়ে যায়। দুটি বেগ একই রকম দেখতে হয় ইওরিওং তা বুঝতে পারেনি।

এরপর সিওক ইওরিওং কমিশনারকে তার চুরি হওয়া ওয়ালেটটি দেখাতে বের হয়। সিওক দেখতে পায় ইওরিওং স্কুটিটি এখনো ফেরত দেয়নি। উল্টো সেটা রিপেয়ার করে তাতে সাইরেন্ট লাগিয়েছে। সিওক জিজ্ঞেস করে তুমি এটা এখনো কেন ফেরত দাওনি? ইওরিওং বলে স্যার আপনি তো স্কুটির বারোটা বাজিয়ে দিয়েছিলেন। আমি আমার সেভিং থেকে স্কুটিটি ঠিক করিয়েছি। এখন এটা আমাদের। ইস্কুটিতে সাইরেন লাগানো ইলিগাল বলে সিওক ইওরিওং  এর স্কুটিতে উঠে বসে।

কমিশনার তার মেয়ে হামারির সাথে কথা বলছিল। কমিশনার হামারিকে ব্রেন থেকে নয় মন থেকে ইনভেস্টিগেশন করতে বলে। ঠিক সেই সময় সেখানে সিওক  আসে ব্যাগ দেখাতে। সে কমিশনার কে ব্যাগটি দেয়। সিওক ভেবেছিল ম্যাডাম তার চুরি হওয়া ব্যাগটি দেখে অনেক খুশি হবে। সে তখনো জানতো না তার ব্যাগটি ডেলিভারি ম্যানের সাথে বদলা বদলি হয়ে গেছে। ম্যাডাম ব্যাগের ভিতর সর্দি কাশির ওষুধের বোতল দেখতে পায়। 

কমিশনার বলেন মনে হয় অনেক বেশি কাজ করার ফলে তোমার মাথা পাগল হয়ে গেছে। সিওক আসল ব্যাগটি নিয়ে আসবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেখান থেকে চলে আসে। যাওয়ার সময় হামারির পার্টনার হিইয়ক ইওরিওংকে সেখান থেকে বের হতে দেখে তাকিয়ে থাকে। তখন সেখানে হামারি আসে। হিইয়ক বলে আমার মনে হয় ইওরিওং তার বোনের উধাও হয়ে যাওয়া রহস্যের জবাব  খুঁজতে সাবওয়ে পুলিশে জয়েন করেছে।  

কারণ সব রহস্যের সমাধান হয়তো সেই টানেলের মধ্যেই আছে। হামারি এ কথায় খুশি না হয় বলে টানেল সব জায়গা আমরা ইনভেস্টিগেশন করে দেখেছি। সেখানে কিছু থাকলে আমরা আগেই জানতাম।সিওক ইতোমধ্যে সেই ডেলিভারি ম্যানের লোকেশন একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে জানতে পারে। 

তাদের বাইকটি নেয়ার জন্য তারা সেই ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে যায়। এদিকে সেই বৃদ্ধ ডেলিভারি ম্যানকে ট্যাটু করা লোকটি তার পার্সেল না পেয়ে মারতে থাকে। সেই বৃদ্ধ ডেলিভারি ম্যান বলে দেখো আমি একজন বুড়ো মানুষ। আমি অনেক কষ্ট করে ডেলিভারি পার্সেল করে আমার সংসার চালাই। তোমার পার্সেল আমি লুকোইনি। 

আসলে পার্সেলটি তো সিওক এর সাথে বদলা বদলি হয়ে গেছে। সিওক ইওরিওং ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে পৌঁছে দেখতে পায় সেখানকার একটি ওয়াশরুমের দরজা লক হয়ে আছে। ইওরিওং সেখানে ডেলিভারি ম্যানটির টিফিন বক্স  এবং রক্ত পড়ে থাকতে দেখে। কোন কিছু তোয়াক্কা না করে তখন ইওরিওং ওয়াশরুমের দরজা ভেঙে ফেলে।

 
ভিতরে বৃদ্ধ লোকটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। এইদিকে ট্যাটু করা লোকটি সিওককে ধাক্কা মেরে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। সিওক তার হাতে থাকা পার্সলের ব্যাগটি খুলে ওষুধের বোতলগুলো চেক করে আর সেখানে ইলিগাল ড্রাগস দেখতে পায়। সিওক ইওরিওংকে বলে এটা ড্রাগ ডিলারদের পুরনো পদ্ধতি। 

তারা সাবওয়ের  ডেলিভারি ম্যানদের কাজে লাগিয়ে ড্রাগ পাচার করে থাকে। ইওরিওং রেগে বলে তাদের আমি ছাড়বো না। চলুন স্যার আমরা তাদের গিয়ে ধরি। সিওক তখন ড্রাগ ইনভেস্টিগেশন টিমকে কল করে রিপোর্ট করার জন্য। ইওরিওং রেগে বলে স্যার আমরা সবসময় রিপোর্ট করতে পারিনা। আমাদের আগে ওদের ধরা উচিত। 

সিওক  বলে এর সাথে মাফিয়া জড়িত। আমরা যদি একটু পরিমাণও ভুল করি আমাদের জীবন যেতে পারে। দুদিন আগে গাড়িতে তোমার হাত আটকে ছিল, এরপর তোমাকে টানলে পড়ে থাকতে দেখলাম। আমার কথা বাদ দিলাম আমি প্রবলেমে ফেঁসে যাই। কিন্তু তুমি? তোমার কি কোন পরিবার নেই? তোমার কিছু হয়ে গেলে তাদের কেমন লাগবে?

ইওরিওং সেই বৃদ্ধ ডেলিভারি ম্যানটির টিফিন বক্স হাতে নিয়ে বলে স্যার সেই ডেলিভারি ম্যান একটি পরিবার রয়েছে। তাদের পরিবারে কেমন লাগবে যখন শুনবে তাদের বাবা ডেলিভারি করার সময় কেউ তাকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। আর পুলিশ তাদের কোন সাহায্য করেনি। তাদের কষ্ট আপনি কি বুঝতে পারেন স্যার ? কেমন লাগে যখন সাধারন মানুষ পুলিশের কাছে গিয়েও কোন সাহায্য পায় না।

সিওক টিফিন বক্সের দিকে তাকিয়ে অনেকক্ষণ কিছু একটা ভেবে বলে আমি  জানি কেমন লাগে। এরপর সে হসপিটালে ফোন দিয়ে নার্সকে বলে তার মাকে বলে দেয়ার জন্য আছে আসতে পারবে না। এরপর বাইরে বের হয়ে সে ইওরিওংকে বলে চলো আমরা আমাদের ডিউটি করি। ড্রাগ ডিল করা সেই ট্যাটু ডিলারকে ধরি। তখন তারা স্টেশনে ফিরে আসে।

তারা সমস্ত সিসিটিভি ফুটে চেক করে সেই ড্রাগ লকার থেকে নিতে কে এসেছিল এটা দেখার জন্য। সেখানে তারা ট্যাটু করা লোকটি নয় বরং ক্যাপ পড়া অন্য একটি লোককে দেখতে পায়। সিওক তার সহকারীদের লোকটির কার্ড এর তথ্য থেকে  লোকেশন বের করতে বলে। কারণ লোকটিকে সাবওয়ে স্টেশনে ঢোকার সময় তার কার্ড দিয়ে পাঞ্চ করতে হয়েছে। সেই কার্ডটিতেই তার সমস্ত তথ্য পাওয়া যাবে।

এরপর তারা সেই লোকটিকে ধরতে একটি বারে যায়। সেখানে একটি মাতাল মেয়ে সিওককে ডিস্টার্ব করতে থাকে। মেয়েটি সিওক এর কোমর থেকে স্টিক গান বের করে তার পায়ে শুট করে। এই বন্দুকে  সাময়িক যন্ত্রণা পাওয়া যায়  এছাড়া তেমন কিছু না। সিওককে যন্ত্রণায় ছটফট করতে দেখে ইওরিওং সেখানে এসে মেয়েটিকে ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। এরপর তারা সেই ক্যাপ পরা লোকটিকে দেখতে পায়। তারা লোকটির পিছনে বারের ওপর একটি কক্ষে যায়।

সিওক ইওরিওংকে কক্ষের বাইরে অপেক্ষা করতে বলে। সে ব্যাকআপ ফোন করতে যাচ্ছিল। ইওরিওং কোন কথা পাত্তা না দিয়ে কক্ষে চলে যায়। সেখানে ইওরিওং  সেই লোকটি এবং বাকিদের সাথে ব্যাড গার্ল সেজে অভিনয় করতে থাকে। ইওরিওং এক পর্যায়ে লোকগুলোর কাছে ড্রাগ আছে কিনা জানতে চায়। লোকগুলো তাকে পুরো এক বক্স ড্রাগ দেখে বলে তার যা মন চায় নিতে। কৌশলে  পুরো বক্স ড্রাগ নিয়ে কক্ষ থেকে পালিয়ে যায় ইওরিওং।

লোকগুলো তাকে ধরতে পিছনে লাগে। ইওরিওং সিওক এর কাছে  ড্রাগগুলো দিয়ে বলে চংনাম স্টেশনের  এক্সিট পয়েন্টে যাওয়ার জন্য। কোন কিছু না বুঝার আগেই সেই লোকগুলো দেখে সিওক  স্টেশনের উদ্দেশ্যে দৌড়াতে শুরু করে। এদিকে ইওরিওং তার মেধা কাজে লাগিয়ে শর্টকাটে  স্টেশনের দিকে যেতে থাকে।

কপর্যায়ে স্টেশনের এক্সিট পয়েন্টে লোকগুলো সিওককে ধরে ফেলে।তারা সিওককে মারতে যাবে ঠিক তখনই সেখানে ইওরিওং  চলে আসে। সে লোকগুলোকে উদ্দেশ্য করে ওয়াটার গান দিয়ে পানি মারতে থাকে। শক্তিশালী পানির ধাক্কায় সে পিছনে পড়ে যাচ্ছিল।

তখন তার পিছন থেকে এসে তাকে সাহায্য করে সিওক।  এখানে সিওক ইওরিওং এর মধ্যে কিছুটা রোমান্টিক ব্যাপার দেখা যায়। এরপর তারা লোকগুলোকে গ্রেফতার করে স্টেশনে ফিরে আসে।
ইওরিওং সেখানে লোকগুলোকে ধমকাচ্ছিল সেই ট্যাটু করা লোকটির সন্ধান দিতে।  অন্যদিকে সিওক বেচারা ইওরিওং এর সাথে সেই পানি মারার মুহূর্ত নিয়ে এখনও ভাবছে।
সে যে ইওরিওং  এর প্রেমে পড়ছে আস্তে আস্তে তা বুঝাই যাচ্ছিল।ইওরিওং লোকটিকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তাকে প্রায় মারতে গিয়েছিল তখন অফিসের বাকিরা এসে তাকে থামায়। কোনভাবেই লোকটি কোন কিছু বলতে চাচ্ছিল না। ঠিক তখনই হাসপাতাল থেকে নার্সের ফোন আসে। একজন ট্যাটু করা লোক হাসপাতাল থেকে সে বৃদ্ধ ডেলিভারি ম্যানকে কিডন্যাপ করে নিয়ে গেছে । সিওক তখন উঠেই সেই লোকেকে বলে তুমি ড্রাগ নিয়ে সিসিটিভি ক্যামেরায় দুইবার ধরা খেয়েছ। তার জন্য তোমার জেল হবে পাঁচ বছর।

তাছাড়া অবৈধভাবে ড্রাগ বিক্রি। সাবওয়ে পুলিশ অফিসারদেরকে মারার চেষ্টা আরো বিভিন্ন কারণে তোমার কমপক্ষে  ৩০ বছরের জেল হবে। ৩০ বছর পর তোমার বয়স যেন কত হবে? তুমি যদি আমাদেরকে সাহায্য না করো কোন সমস্যা নেই আমরা সিসিটিভি ফুটেজ থেকে ঠিকই ঐ লোককে বের করে নিব। সিওক ক্রাইম ইউনিটকে ফোন করতে যাবে তখন সেই লোকটি মুখ খুলতে রাজি হয়।

সে বলে প্রতি সপ্তাহে ইওনচিওং পোর্ট দিয়ে  অবৈধ ড্রাগ আসে। আমরা সেই ড্রাগ গুলো নিয়ে তার দেয়া ঠিকানায় পৌঁছে দেই। এরজন্য আমরা তার কাছ থেকে পেমেন্ট পাই। ড্রাগ গুলো একবার পৌঁছে গেলে ট্যাটু করার লোকটি তার বস থেকে পেমেন্ট পায়। সিওক বলে সে পেমেন্ট কিভাবে সংগ্রহ করে? অনলাইন পেমেন্ট তো সে করবে না। তারা বলে সাবওয়ের নীল রঙের ভেন্ডিং মেশিনের নিচে থেকে লোকটি প্রতি সপ্তাহে পেমেন্ট সংগ্রহ করে।

এছাড়া লোকটি সম্পর্কে সে আর কিছু জানেনা। ঠিক ওই মুহূর্তেই  ট্যাটু করা লোকটির কল আসে। ট্যাটু করা লোকটি আসলে শিওর হতে চাচ্ছিল এখানে আটকা পড়া লোক গুলো ড্রাগ পৌঁছে দিয়েছে কিনা। কারণ যদি ড্রাগ পৌঁছে যায় তাহলে সে পেমেন্ট সংগ্রহ করতে যাবে। সিওকের কথামত লোকটি ট্যাটু করা লোকটিকে ফোনে বলে তারা ড্রাগ পৌঁছে দিয়েছে। আগামী এক ঘণ্টার মধ্যেই ট্যাটু করা লোকটি পেমেন্ট নিতে  নীল ভেন্ডিং মেশিনের সামনে যাবে।

এখানে প্রায় ৩০০ টি স্টেশন রয়েছে। সব স্টেশনে গিয়ে চেক করা এই সময়ের মধ্যে প্রায় অসম্ভব। ইওরিওং বলে সব স্টেশন চেক করার দরকার নেই আমাদের শুধুমাত্র ২১ টি স্টেশনে খোঁজ করলেই চলবে। ওই ২১টি স্টেশনেই রয়েছে নীল ভেন্ডিং মেশিন।সিওক  ম্যাপ দেখে ইওরিওং  এর কাছে লোকেশন গুলো চিহ্নিত করে নেয়। তার সবকিছু মনে রাখার ক্ষমতা দেখে আরো একবার সবাই অবাক হয়ে যায়।

এরপর সবাই দলে দলে ভাগ হয়ে সেই ২১টি স্টেশনের ভেন্ডিং মেশিন  চেক করতে যায়। এই কাজে অন্য স্টেশনের অফিসাররাও তাদেরকে সাহায্য করে। একটি ভেন্ডিং মেশিনের নিচে টাকার বান্ডেল পাওয়া যায়। তারা সেখানে গিয়ে ট্যাটু করা লোকটি আসার জন্য অপক্ষা  করতে থাকে। এক পর্যায়ে সেই ট্যাটু করা লোকটি সেখানে আসে টাকা সংগ্রহ করতে। ইওরিওং তখনই উঠে লোকটিকে ধরতে যাবে সিওক  তাকে থামিয়ে দেয়।

কারণ লোকটির পিছনে গিয়ে তাদের সেই বৃদ্ধ ডেলিভারি ম্যানকে উদ্ধার করতে হবে। তারা লোকটির গাড়ির পিছনে অনুসরণ করে যেতে থাকে। ট্যাক্সির মধ্যে সিওকের ইওরিওং এর বার বার বিপদে পড়ার কথা মনে পড়ে। সে তাকে একটি বন্দুক দেয়। যদিও সাবওয়ে অফিসারদের বন্দুক দিয়ে গুলি করার নির্দেশনা নেই যদি না পরিস্থিতি একদম খারাপ হয়।
তারা সাধারণত বন্দুক রাখে ভয় দেখানোর জন্য। সিওক ইওরিওংকে বলে গুলি না চালাতে। যদি চালাতেই হয় প্রথমটা চালাতে । কারণ প্রথম গুলিটা ফাঁকা গুলি। ইওরিওং বলে  সমস্যা নেই আমি এটা দিয়ে শুধু ভয় দেখাবো।

তারা লোকটিকে অনুসরণ করে বৃদ্ধ ডেলিভারি ম্যানকে যেখানে রাখা আছে সেখানে চলে আসে। এসেই সে বৃদ্ধ ডেলিভারি ম্যানকে মারতে থাকে। ইওরিওং এসে তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলে। কিন্তু লোকটি হাসতে থাকে। পিছন থেকে তখন সিওক লোকটিকে  মাটিতে ফেলে দেয়।দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হওয়ার এক পর্যায়ে সিওকের বুকে লোকটি ছুরি ঢুকিয়ে দেয়।

ইওরিওং এসব দেখে ঘাবড়ে যায়। সে সিদ্ধান্ত নয় গুলি করার। লোকটি বৃদ্ধি ডেলিভারি ম্যানের গলায় গিয়ে ছুরি ধরে বলতে থাকে তোমাদের পুলিশদের দৌড় আমার জানা আছে। আমি জানি তোমরা গুলি করবে না। লোকটির কথা কে ভুল প্রমাণ করে ইওরিওং পায়ে গুলি করে। ঠিক তখনই সিওক বলে ওঠে তোমাকে বলেছিলাম গুলি না করতে।

সিওক ইওরিওং এর কাছে এগিয়ে আসতে থাকে। ইওরিওং সিওকের বুক থেকে ছুরি বের করতে যাচ্ছিল। শার্টের মধ্যে সে দেখতে পায় ছুরি আসলে সিওকের বুকে লাগে নি লেগেছে তার শার্টের মধ্যে রাখা সেই বৃদ্ধ ডেলিভারি ম্যানের টিফিন বক্সে। আর সেখান থেকে সস বের হয়ে তার পুরো শার্টে লেগে আছে। এই দেখে দুইজন তখন হাসতে শুরু করে। ঠিক তখনই ইওরিওং কাঁদতে কাঁদতে বলে স্যার আমি ভেবেছিলাম আপনি মরে গেছেন।

আমি আপনাকে হারিয়ে ফেলেছি। সিওক তাকে শান্ত হতে বলে আর বলে দেখো আমার কিছুই হয়নি আমি ঠিক আছি। এরপর পুলিশ এসে সেই ট্যাটু করা লোকটিকে গ্রেফতার করে। এম্বুলেন্স আসে সেখানে বৃদ্ধ ডেলিভারি ম্যানটিকে নিতে। ডেলিভারি ম্যান এর মেয়ে এসেছিল সেখানে। এটি ওই মেয়ে যে কিনা স্টেশনে লিফলেট বিলি করার সময় সিওক ইওরিওংকে কাজে ডিস্টার্ব করেছিল ।

সে অফিসারদের কাছে আগের ঘটনার জন্য ক্ষমা চায়। আর তার বাবাকে বাঁচানোর জন্য ধন্যবাদ দেয়। অফিসাররা হাসিমুখেই বলে কোন ব্যাপার না এটা তাদের কর্তব্য। এরপর সেও হাসপাতালে চলে যায় তার মায়ের সাথে দেখা করতে। সে তার পুরো স্টাইল চেঞ্জ করে দেয় তার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে আসার সময়। কারণ তার মা মনে করে সে একজন পপ স্টার। সে তার মায়ের জন্য সেখানে চিকেন নিয়ে আসে।

এদিকে ইওরিওং বাসায় একা একা তার বোনের কথা ভেবে কাঁদছিল। অটিস্টিক হয় তার বোন বিভিন্ন অদ্ভুত কর্মকাণ্ড করতো। এই যেমন টিভি রিমোট দিয়ে বারবার টিভি অন করা। ইওরিওংকে এইসব কষ্ট সহ্য করতে হতো। কিন্তু এখন যখন তার বোন তার পাশে নেই তখন তার খুব খারাপ লাগছে। এদিকে হামারি এবং হিইয়োক তাহলে ইনভেস্টিগেশন করছিল।

হামারি বলে লাশ যদি টানেলের মধ্যে নিয়ে আসা হয় তাহলে সে লোকটির আবারও এখানে আসার কথা। তাছাড়া সিসিটিভি ফুটেজেও এসব রেকর্ড হওয়ার কথা। কিন্তু কোন কিছুই হয়নি। তুমি এক কাজ কর গত দুই বছরের সব ডকুমেন্টস নিয়ে আসো। আমরা সবকিছু আবার চেক করবো। ২য় এপিসোডের শেষ পর্যায়ে টানেলের একটি গোপন কক্ষে মুখ ঢাকা একজন ব্যক্তিকে আমরা দেখতে পাই। সেই কক্ষে বিভিন্ন টর্চারের যন্ত্র পড়েছিল।
সাথে লক করা কিছু বক্স আমরা দেখেতে পাই। কক্ষের দেয়ালে সেই সাবওয়েতে  খুন হওয়া  বিভিন্ন ব্যক্তির ছবি লাগানো ছিলো। সেখানে ইওরিওং এর বোনের ছবিও লাগানো ছিল। এই ব্যক্তিই ইওরিওংকে পিছন থেকে আঘাত করে পালিয়ে গিয়েছিল টানেলে। তার মানে সে এখন জানে সে আগে  ইওরিওং এর যে বোনকে মেরেছিল তার জমজ বোন আছে।

কিংবা আদোও যাকে সে মেরে ছিল সে মরেইনি। তাহলে কি এখন লোকটি ইওরিওং এর পিছনে লাগবে ? কেন সে সাবওয়েতে মানুষগুলোকে খুন করছে? ইওরিওং এর বোনের যদি হত্যাই হয়ে থাকে তাহলে তার লাশ কোথায় ? এসব কিছুই যেন একটা রহস্য। এসব রহস্যের সমাধান জানতে অপেক্ষা করুন আমাদের পরবর্তী ৩য় এপিসোডের জন্য। আপনার যদি আমাদের চ্যানেলটিতে নতুন হন তাহলে এখনই সাবস্ক্রাইব করে পাশে থাকা বেল বাটনটি অন করে দিন। সবাইকে আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *