the lobster
the lobster

গলদা চিংড়ি (The Lobster) পুরো ছবির গল্প ব্যাক্ষা সহ বর্ণণা

Posted on

এমন একটি বিচিত্র দেশ যেখানে সিংগেল মানুষদের জন্য কোন জায়গা নেই। যদি কোন কারণে কারো  পার্টনার তাকে ছেড়ে চলে যায় বা সে মারা যায়, তাহলে তার কাছে ৪৫ দিন সময় থাকে নতুন পার্টনার খুজে নেয়ার জন্য। যদি কেউ এই ৪৫ দিনে নতুন পার্টনার খুজতে ব্যর্থ হয় তাহলে তাকে জানোয়ারে রূপান্তর করে দেয়া হয়। 

হ্যা বন্ধুরা আপনারা ঠিকই শুনছেন। মুভিটির নাম “The Lobster” । মুভি শুরু হতেই আমরা মুভির লিড ক্যারেক্টার ডেভিডকে দেখতে পাই যাকে তার ওয়াইফ ছেড়ে চলে গেছে। আর এখন সে সিংগেল। সমাজের চোখে এখানে সিংগেল লোকদের থাকার অধিকার নেই। ডেভিডকে কিছু লোক এসে একটি অজানা হোটেলে নিয়ে যায়। যেখানে ডেভিডকে বলা পার্টনার খোজার জন্য তার হাতে মাত্র আর ৪৫ দিন সময় আছে। সেখানে ডেভিড এর মতো আরোও অনেক লোক ছিলো।

যাদের কাউকে হয়তো তাদের পার্টনার ছেড়ে চলে গিয়েছিলো, নয়তো তাদের মৃত্যু হয়েছে। তাদের এখানে আসা সিংগেলদের মধ্যে থেকে তাদের পার্টনার খুজতে হবে। আর যদি তারা ৪৫ দিনে পার্টনার খুজতে না পারে তাহলে তাদেরকে তাদের পছন্দের জানোয়ারে রুপান্তর করে দেয়া হবে। পার্টনার পছন্দ করার একটা শর্তও ছিলো। পার্টনার এর সাথে আপনার মিল থাকতে হবে৷ একটুও অমিল থাকা যাবে না। নয়তো আপনি তাকে বিয়ে করতে পারবেন না।

ডেভিডের কাছে একটি কুকুর ছিলো। আসলে এই কুকুরটি ছিলো ডেভিডের ভাই, যে কিছু বছর আগে এই হোটেলে এসেছিলো।  আর সে তার পার্টনার খুজে পায় নি। ফলস্বরূপ তাকে একটি কুকুরে রুপান্তর করে দেয়া হয়। তারপর ডেভিডকে দিয়ে একটি ফ্রম পূরণ করানো হয় আর তাকে হোটেলে আলাদা রুম দেয়া হয়। তখন ডেভিডের রুমে ম্যানেজার ওলিভিয়া আসে আর ডেভিডকে জিজ্ঞাসা করে যদি সে তার পার্টনার না পায় তাহলে কোন জানোয়ারে সে রূপান্তর হতে চায়? 

ডেভিড বলে সে গলদা চিংড়ি হতে চায়। কারণ গলদা চিংড়ি ১০০ বছরের অধিক সময় বেচে থাকতে পারে।  সেই সাথে সমুদ্রও তার অনেক পছন্দ। তারপর ওলিভিয়া ডেভিডকে তাদের হোটেলের কিছু রুলস বলে সেই সাথে এও বলে তাকে তাদের রুলস অনুযায়ী কাপড় পড়তে হবে। সে এখানে পার্টনার হিসেবে শুধু মেয়েদেরকেই বাছাই করতে পারবে। ছেলেদের নয়। অর্থাৎ সমকামী হওয়া যাবে না। 

যতক্ষণ পর্যন্ত সে পার্টনার খুজে না পায় সে এখানে শুধু মাত্র সিংগেল টাইপের গেইম খেলতে পারবে। কোন পার্টনার প্রয়োজন হয় এমন টাইপের গেইম খেলতে পারবে না। সেই সাথে হোটেল এর মধ্যে সে মাস্টারবেট করতে পারবে না। কিন্তু সে চাইলে হোটেলে কাজ করা মেয়েদের সাথে ইনটিমেট হতে পারবে। কিন্তু এখানেও আছে টুইস্ট। কাজের মেয়ের সাথে ইন্টিমেট হওয়ার সময় কাজের মেয়ে  Climax শেষ না করেই উঠে যায় যাতে করে তার মেয়েদের উপর আরোও বেশি ইন্টারেস্ট জাগে। 

এরপর আমরা দেখি ডেভিড লাঞ্চ করতে যায় যেখানে সে দুইজন লোকের সাথে পরিচিত হয়। যাদের একজন একজন এর নাম বেন  আরেক জনের নাম জন। তারাও ডেভিডের মতোই সিংগেল। তারাও এখানে পার্টনার খুজতে এসেছে। কথা বলতে বলতে তারা সবাই ভালো বন্ধু হয়ে যায়।

এরপর আমরা ছবিতে দেখি সেখান থেকে কিছু লোল ভেগে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারণ তারা জানোয়ারে রুপান্তর হতে চায় না। যতোগুলো সিংগেল মানু্ষ এখান থেকে ভেগেছিলো তারা সবাই পাশের একটি জংগলে গ্রুপ বানিয়ে লুকিয়ে থাকতো। এই গ্রুপের নাম ছিলো লোনার গ্রুপ। 

আরোও পড়ুনঃ কম্পন (TREMORS) পুরো ছবির গল্প ব্যাক্ষা সহ বর্ণণা

হোটেল অর্গানাইজেশনের প্রতিদিন হান্টিং মিশন পরিচালনা করতো। এই মিশনে হোটেলের সকল সিংগেল লোকদের কাজ দেয়া হতো সেই হোটেল থেলে পালিয়ে যাওয়া সিংগেলদের মেরে ফেলতে। এই মিশনের ফায়দা ছিলো যে যতো বেশি লোনার গ্রুপের সদস্য মারবে সে ততো বেশি পড়ার জন্য ড্রেস পাবে।

একদিন হান্টিং মিশনে যাওয়ার সময় ডেভিডের পাশে এশলে নামের একটি মেয়ে বসে যার খুব কম সময় বাকি ছিলো। সে ডেভিডকে তার পার্টনার হওয়ার জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু ডেভিড মানা করে দেয়। সে ফ্রাস্টেটেড হয়ে তখন বলে শেষ সময়ে এসে যদি সে পার্টনার না পায় তাহলে সে সুইসাইড করবে। সে জানোয়ারে রুপান্তর হতে চায় না। 

অন্যদিকে জন জেসিকা নামের এক মেয়েকে এপরোচ করার চেষ্টা করে যার নাকে দিয়ে সবসময় ব্লাড বের হয়। জন আর ওর মধ্যে কোন মিল না থাকায় জন তার নিজেকে আঘাত করে ফলে তার নাক থেকেও ব্লাড বের হতে থাকে। যা দেখে জেসিকা ভাবে জনেরও হয়তো তার মতো রোগ আছে। আর দুইজন পার্টনার বানার জন্য এইটুকু মিল যথেষ্ট। তাদেরকে কাপোল ঘোষণা করা হয়। এর পর থেকে জন হয় তাকে আঘাত করে নাক থেকে ব্লাড বের করতো,  নয়তো শার্টে কেচাপ লাগিয়ে রাখতো। যাতে তার পার্টনারের মনে হয় তার নাক থেকেও ব্লাড বের হচ্ছে।

এভাবেই অনেক দিন চলে যায় কিন্তু ডেভিড তার মতো সিমিলার পার্টনার খুজে পায় না। তারপর ডেভিডের সাথে এঞ্জেলিকা নামের একটি মেয়ের পরিচয় হয় যার না ছিলো কিছুর প্রতি অনুভূতি না ভালোবাসা। তার সামনে কোন লোক মরে গেলেও সে এক বিন্দু পরিমাণ রিয়েক্ট করতো না। ডেভিড তাকে দেখে সিদ্ধান্ত নেয় সে এঞ্জেলিকাকে পার্টনার করবে। কারণ অনুভূতি কম থাকায় সে ভাবে সে সহজে তাকে পার্টনার হওয়ার জন্য রাজি করাতে পারবে।

এরপর আমরা দেখি এশলের হোটেলে ৪৫ দিন পূর্ণ হয়ে যায়৷ আর কোন পার্টনার না পাওয়ায় সে হোটেল থেকে নিচে পরে সুইসাইড করে৷ যার সামনে এঞ্জেলিকা বসে কফি খাচ্ছিলো। কিন্তু সে একটুও রেয়েক্ট করেনা। তারপর ডেভিড তার কাছে আসে। আর সেও অনুভূতীহিনের মতো এক্টিং করে বলে ভালো হয়েছে সে মরেছে। যা দেখে এঞ্জেলিকা ভাবে ডেভিডও তার মতো অনুভূতিহীন। এঞ্জেলিকা তাকে টেস্ট করার জন্য ডেভিড এর সামনে মরার নাটক করে। কিন্তু ডেভিড কোন রিয়েক্ট করে না। যা দেখে এঞ্জেলিকা ইমপ্রেস হয়। এরপর তাদেরও বিয়ে দিয়ে দেয়া হয়। 

এঞ্জেলিকার এখনোও ডেভিডের উপর সন্দেহ ছিলো। তাই সে পরের দিন তার কুকুর অর্থাৎ তার ভাইকে মেরে ফেলে। যা দেখে ডেভিড কেদে ফেলে। তখন এঞ্জেলিকা বুঝে ফেলে ডেভিড মিথ্যা বলে বিয়ে করেছে। তখন এঞ্জেলিকা তাকে ধরে হোটেল অথোরিটির কাছে কমপ্লেন করতে নিয়ে যেতে থাকে। মাঝপথে একজন কাজের মেয়ের সাহায্যে ডেভিড এঞ্জেলিকাকে বেহুশ করে তাকে ট্রান্সফর্মেশন রুমে নিয়ে জানোয়ারে রুপান্তর করে দেয়। সেই কাজের মেয়ে কেনো তাকে সাহায্য করেছিলো তা আমরা একটু পর জানতে পারবো।তারপর ডেভিড সেই হোটেল থেকে পালিয়ে জংগলে লুনার গ্রুপের কাছে চলে যায়। যার লিডার ছিলো লিয়া।সে ডেভিকে তাদের গ্রুপে নিয়ে নেয়। লুনার গ্রুপেরও কিছু নিয়ম ছিলো। এখানে কেউ কারো সাথে ফ্লার্ট ভালোবাসা কিছুই করতে পারতো না।

যদি কেউ এরকম করার সময় ধরা পরে তাহলে তাকে পানিসমেন্ট দেয়া হতো। লিয়া ভালোবাসাকে ঘৃণা করতো। কারণ সে মনে করতো এইটা লোক দেখানো। হোটেল অথোরিটি তাদের উপর হামলা করলে হামলার সময় কেউ কাউকে সাহায্য করে না এখানে। যে যার নিজের জীবন বাচায় তখন। লিয়া ডেভিডকে বলে যদি তার গ্রুপে থাকতে হয় তাহলে তাকে এই নিয়মগুলো মেনে থাকতে হবে। ডেভিড এইসবে রাজি হয়ে যায়। এখানে আমরা আরোও জানতে পারি ডেভিডকে যেই কাজের মেয়ে সাহায্য করেছিলো সেও এই গ্রুপের সদস্য। কারণ সে তার হাসবেন্ডের সাথে থেকে বিরক্ত হয়ে গেছে। সে তাকে ছাড়তে চায়। কিন্তু এতে করে তার হাসবেন্ড একা হয়ে যাবে। ফলে তাকেও হোটেলে থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে পার্টনার খুজতে হবে। যা সে চায় না।সে প্রতিদিন লুকিয়ে লুকিয়ে জংগলে এসে লিয়াকে হোটেলের ব্যাপারে তথ্য দিতো।

তারপর ডেভিড এর সাথে রিচার্ড নামের এক মেয়ের পরিচয় হয়। ডেভিড জানতে পারে সেও তার মতো দূরের জিনিস চোখে দেখতে পায় না। এই ব্যপারটা দুইজনেরই মিলে যায়। তাই ডেভিড এর সাথে ওর ভালো একটা সম্পর্ক গড়ে উঠে। 

এই গ্রুপের মেম্বাররা সপ্তাহে একবার ফর্মাল কাপড় পড়ে হাসবেন্ড ওয়াইফ সেজে শহরে যেতো। আর তাদের প্র‍য়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে আসতো। কিন্তু একদিন এক পুলিশ অফিসার এর ডেভিড এর উপর সন্দেহ হয়। সে তাকে তার মেরিজ সার্টিফিকেট দেখাতে বলে। তখন রিচার্ড এসে নিজেকে ডেভিড এর ওয়াইফ বলে বাচিয়ে নেয়। 

একদিন রাতে তারা হোটেলে আক্রমণ করে যেখানে হোটেলে কাজের মেয়েটিও সাহায্য করেছিলো। প্রথমে তারা হোটেলের ম্যানেজারকে টার্গেট করে৷ তারা তার হাসবেন্ডের মাথায় বন্দুক ধরে ওলিভিয়াকে শুট করতে বলে। নিজের জীবন বাচানোর জন্য সে তার ওয়াইফকে শুটও করে দেয়। কিন্তু বন্দুক খালি থাকায় সে বেচে যায়। আসলে লুনার গ্রুপের উদ্দেশ্য ছিলো তাদের সম্পর্ক যে মিথ্যা তা তুলে ধরা। তারপর তারা তাদেরকে সেই অবস্থাতেই ছেড়ে চলে যায়। আর ওলিভিয়া তার হাসবেন্ড এর উপর রাগে জলতে থাকে। 

এর মধ্যে ডেভিড জন এর কাছে যায়। আর জেসিকাকে বলে দেয় জনের কোন রোগ নেই। জন তাকে মিথ্যা বলেছে যে তার নাক থেকে ব্লাড বের হয়। যা শুনে জেসিকা অনেক আপসেট হয়ে যায়।সময় যতো যাচ্ছিলো ডেভিড আর রিচার্ড এর সম্পর্ক আরোও গভির হচ্ছিলো। তাদের সম্পর্ক ভালোবাসায় রূপ নেয়। তারা হাতের ইশারায় দূর থেকে একজন আরেক জনের সাথে কথা বলতো যাতে অন্যদের তাদের উপর সন্দেহ না হয়। আর সুযোগ পেলে তারা জংগলের মধ্যে ইন্টিমেড ও হতে শুরু করে।

তারা সেখান থেকে পালানোর পরিকল্পনা করে। কিন্তু হঠাত লিয়া তাদের সম্পর্কের ব্যপারে জানতে পারে। রিচার্ড তার ডাইরিতে তাদের সম্পর্কের কথা লিখেছিলো। সেই ডাইরি লিয়া পড়ে ফেলে। আর সে অনেক রেগে যায়। কিন্তু সে তাদেরকে এই ব্যপারে কিছুই বলে না। 

লিয়া একদিন রিচার্ডকে ডক্টর দেখানোর নাম করে নিয়ে যায়। সে তাকে বলে তার অপরেশন করা হবে।  যার ফলে সে চোখে স্পষ্ট সব দেখতে পারবে। কিন্তু লিয়া আসলে তাকে অন্ধই করে দেয়। যাতে ডেভিড এর সাথে তার কোন মিল না থাকে। রিচার্ড এই ব্যাপারে জানতে পারলে সে লিয়ার উপর হামলা করে। কিন্তু লিয়াকে মারতে গিয়ে সে সেই হোটেলের কাজের মেয়েকে মেরে ফেলে। ডেভিড এই সব জানার পর অনেক আপসেট হয়ে যায়।  তাদের দুইজনের পরিকল্পনা ছিলো এখানে থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে সুখে সংসার করবে৷ কিন্তু এখন আর তা সম্ভব না কারণ তাদের মধ্যে এখন কোন মিল নেই।

এরপর ডেভিড সুযোগ বুঝে লিয়ার উপর হামলা করে তাকে অজ্ঞান করে ফেলে।  আর তাকে কবরে ফেলে দেয়। জংলি কুকুর এসে লিয়াকে খেয়ে ফেলে। এরপর ডেভিড লিয়াকে নিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে একটি রেস্টুরেন্ট এ যায়। আর সেখানে সে একটি ছুরি জোগাড় করে। কারণ সেও অন্ধ হতে চায়। যাতে দুইজনের মধ্যে আবার মিল ফিরে আসে৷ এরপর ডেভিড ওয়াশরুমে গিয়ে চাকু নিয়ে তার চোখ উঠিয়ে ফেলতে চেষ্টা করতে থাকে৷ কিন্তু তার হাত কাপতে থাকে। অন্যদিকে রিচার্ড তার জন্য সেখানে বসে অপেক্ষা করছিলো। আর মুভি এভাবেই শেষ হয়। ডেভিড কি সফল হয়েছিলো অন্ধ হতে তা নিয়ে থাকে কনফিউশন। আপনাদের কি মনে হয় ডেভিড কি পেরেছিলো অন্ধ হতে? আমাদেরকে জানাবেন কমেন্টে। যদি ভিডিওটি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে ভিডিওটি লাইক করবেন। আর এইরকম আরোও ভিডিও পেতে চ্যানেল্টি সাবস্ক্রাইব করে আমাদের সাথেই থাকবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *